শব্দ নিয়ে খেলার জন্যই লিখতে ভালো লাগে। একটা শব্দের পরে কোন শব্দটা বসবে? শব্দের পুরোনো শরীরে আচমকা কো্ন নতুন শব্দ, কোন সুন্দর শব্দ। সব মিলিয়ে সর্বাঙ্গ সুন্দর; আলাদা করে প্রত্যেককে সাজতে হয় না, সাজাতে হয় না। ঠিক যেমনটা কপালে রক্তলাল টিপ দেবার সাথে সাথেই একজন রমনীর সৌন্দর্য বদলে যায়; আটপৌরে কেউ হয়ে ওঠে অনন্যা।
প্রতিটা শব্দই একেকটা বাঁক; একটা মোচড়, যার রয়েছে আগে এবং পরে। প্রতিটা বাঁকেই আছে শুরুর আনন্দ, ফুরানোর ক্লান্তি, আর ছেড়ে আসার কষ্ট। শব্দদের কাজ পাঠককে সঠিক বাঁকে দাঁড় করানো; সঠিক মোড়ে ছেড়ে যাওয়া। কম্পোজিশন, পারস্পেকটিভ; সঠিক মোড়ে দাঁড় করিয়ে সঠিক পারস্পেকটিভ চোখের সামনে খুলে দেয়া। সোজাসুজি কিছু না বলেও সবকিছু বলে দেয়া। কবিতা এটা পারে; কখনো কখনো সিনেমাও। আমি চাই আমার গল্পরা ঠিক এমনটাই হোক।
কখনো কখনো কোন বিষন্ন মুখের দিকে তাকিয়ে সানাইয়ের করুন সুর শোনা যায়। সব নীরবতা সত্ত্বেও দুপুরের ঝলমলে রোদে মাদলের শব্দ বেজে উঠে বা বৃষ্টির শব্দে জলতরঙ্গের আওয়াজ বা মেঘলা আকাশে কারো চাঁপা কান্নার শব্দ। জগতের সকল প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধেই এমনটা ঘটে; সম্ভব হয় এক ইন্দ্রিয় দিয়ে আরেক ইন্দ্রিয়ের বিষয়কে অনুধাবন করা। শ্রবন দিয়ে রুপকে অনুভব; দৃষ্টি দিয়ে শব্দকে; শব্দ দিয়ে স্বাদ, আর গন্ধ, আর বর্ণ, আর স্পর্শ। আমি চাই আমার শব্দেরা ঠিক এমনটাই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য হোক।
লেখক হিসাবে আমার তেমনটাই হওয়ার কথা পাঠক হিসেবে আমি যেমন।